দ্রুত নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে সরকারের পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা শেখ হাসিনার কানে এ কথা পৌঁছে দিতে চাই-আপনার অবৈধ সরকারের দিন শেষ, পদত্যাগ করুন। দ্রুত নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নইলে পালানোরও পথ খুঁজে পাবেন না। সব স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদীর যে পরিণতি হয়েছে আপনাদেরও সেই একই পরিণতি হবে।
স্বাধীনতা র্যালির আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি শনিবার বিকালে এসব কথা বলেন। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে এ র্যালির আয়োজন করে বিএনপি। কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে র্যালি শুরু হয়ে বিজয়নগর ও তোপখানা রোড হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিকে কেন্দ্র করে বেলা ১২টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে জড়ো হন। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকার পাশাপাশি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড। এছাড়া ঢোলসহ বিভিন্ন রকমের বাদ্যযন্ত্রের বাজনাসহ পুরনো ঢাকার ঘোড়াগাড়ি, মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের নানা দৃশ্য প্রদর্শন। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ র্যালির উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
জিয়াউর রহমানসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সারা দেশের মানুষ ৫০ বছর পরে আক্ষেপ করছে-স্বাধীনতা এনে কী পেয়েছি আমরা! আজ কথা বলার স্বাধীনতা নেই, নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার স্বাধীনতা নেই। মানুষের গণতান্ত্রিক কোনো অধিকার নেই। অর্থনীতি ধ্বংসের পথে চলে গেছে। বেড়ে গেছে চাল-ডাল-তেল সব কিছুর দাম। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। গণতন্ত্র ফিরে পেতে হলে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অনতিবিলম্বে এ সরকারের পদত্যাগ চাই। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি নিন। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বড় বেহায়া এ আওয়ামী লীগ সরকার। এ সরকার যেহেতু মানুষের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি, সেহেতু তারা মানুষের কথা চিন্তা করে না।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম। র্যালিতে অংশ নেন মির্জা ফখরুল, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, এজেডএম জাহিদ হোসেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, শ্যামা ওবায়েদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ নেতারা।
জিয়ার মাজারে বিএনপির শ্রদ্ধা : এদিন বেলা ১১টার দিকে শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ও জনগণের ঐক্য গড়ে বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে ফের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব। অবশ্যই আমরা একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জনগণের সরকার ও সংসদ গঠন করব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল,
কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমিনুল হক, যুবদলের সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।